জেনে নিন হিট স্ট্রোক কি, কেন হয়, তা থেকে বাঁচার উপায় আর এই প্রচন্ড গরমেও সুস্থ থাকুন

Sunday, May 27, 2012 0 comments

প্রচন্ড গরমে দরদর করে হেটে অফিস থেকে বাসায় ফিরছেন। হঠাৎ দেখলেন মাথা ঝিম ঝিম করে উঠছে, সাথে শরীর খুব
দুর্বল মনে হচ্ছে। বমি বমি লাগছে সেই সাথে চোখে ঝাপসা দেখছেন। একটু পর হঠাৎ করে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেন
না। রাস্তার পাশে পড়ে গেলেন-- ঘটনাটি হয়ত আপনার জীবনে এখনো ঘটে নি, কিন্তু যা গরম পড়েছে ইদানিং, সাবধান না
থাকলে আপনিও আক্রান্ত হতে পারেন হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকে।


হিট স্ট্রোক কি?


হিট স্ট্রোক হচ্ছে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধ্বি পেয়ে সৃষ্টি হওয়া এক প্রকার জটিলতা। স্বাভাবিক দেহের তাপমাত্রা ৯৮
ফারেনহাইট। যদি এটি ১০৪ ফারেনহাইট ক্রস করে তখনি হিট স্ট্রোক হতে পারে। হিট স্ট্রোক এক প্রকার মেডিকেল
ইমার্জেন্সি যেখানে সাথে সাথে রোগিকে চিকিৎসা না দেয়া হলে রোগি মৃত্যুবরন করতে পারে। রোগিকে গরম থেকে
সরিয়ে এনে তার দেহের তাপমাত্রা কমিয়ে আনা হিট স্ট্রোকের চিকিৎসার একটি দরকারি ধাপ।

হিট স্ট্রোকের কারন:

Dehydration হিট স্ট্রোকের প্রধান কারন। হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে প্রচন্ড গরমে দেহে পানি কমে গিয়ে যেন
dehydration না হয় তা নিশ্চিত করা ও বেশি গরমে ভারি শারীরিক পরিশ্রমে না জড়ানোই উচিত।

কারা হিট স্ট্রোকে বেশি আক্রান্ত হয়?

ছোট বাচ্চা, বয়স্ক লোক, ব্যায়ামবীর বা দিনমজুরদের হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা খুবই বেশি। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে
এটি খুবই ভয়াবহ, বাচ্চাদের দেহের তাপ নিয়ন্ত্রন করার সিস্টেম ডেভেলপড না হওয়ায় তাদের হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা
বেশি। প্রচন্ড গরমে বাচ্চাকে লক করা গাড়িতে রেখে পাশের দোকানে কেনাকাটা করতে নামবেন না। বাচ্চাকে সাথে নিয়ে
যান। বৃদ্ধদেরও দেহের তাপ নিয়ন্ত্রন করার সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়, ফলে তারাও ভালনারেবল হয়ে পড়ে।

শরীরের তাপমাত্রা অসহনীয় অবস্থায় গেলে এসব জটিলতা দেখা যায়:

  • মাথা ঝিম ঝিম করা
  • বমি করা
  • অবসাদ
  • দুর্বলতা
  • মাথা ব্যাথা
  • মাংশপেশির খিঁচুনি
  • চোখে ঝাপসা দেখা

তখন হিট স্ট্রোকের নিমোক্ত লক্ষনগুলো দেখা যায়:

  • দেহের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেশি
  • ঘামের অনুপস্থিতি, চামড়া খসখসে লাল হয়ে যাওয়া
  • পালস বেড়ে যাওয়া
  • শ্বাস নিতে কষ্ট
  • মাতালের মত ব্যবহার
  • হ্যালুসিনেশন
  • কনফিউশন
  • অশান্তি করা
  • খিঁচুনি
  • কোমায় চলে যাওয়া

হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে কিভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করবেন:

  • আক্রান্ত লোকটিকে ছায়াযুক্ত একটি জায়গায় নিয়ে আসুন, গায়ের ভারি কাপড় খুলে দিন, তার গায়ে ঠান্ডা পানি ঢালুন। তাকে সম্ভুব হলে ফ্যানের নিচে বা এসি রুমে নিয়ে আসুন। এতে গায়ের ঘাম উড়ে যাবে। সম্ভব হলে তার বগল ও রানের খাঁজে বরফ দিন।
  • যদি আক্রান্ত লোকটি পানি খাওয়ার মত অবস্থায় থাকে তাহলে তাকে ঠান্ডা পানি বা পানীয় পান করতে দিন।
  • একটি থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখুন এবং ১০১-১০২ ডিগ্রী ফারেনহাইটে আসা না পর্যন্ত তাকে ঠান্ডা করা চালিয়ে যান।

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ:

হিট স্ট্রোক
  • গরমের সময় দেহকে dehydrated হতে না দেয়া। শরীরে পানির পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে প্রচুর পরিমাণ পানি, ডাবের
  • পানি, ওরাল স্যালাইন পান করা।
  • বেশি গরমের সময় ব্যায়াম বা ভারি কায়িক পরিশ্রম না করা।
  • গরমে বাইরে বের হলে সাদা বা হালকা রঙের কাপড় পরে বাইরে বের হওয়া।
  • ঘামের সাথে দেহের লবন বেড়িয়ে যায়, তাই দুর্বল লাগলে খাবার স্যালাইন খাওয়া।

0 comments:

Post a Comment

কমেন্ট করুন আর নতুন নতুন পোস্ট দিতে আমাকে উৎসাহিত করুন

 

©Copyright 2012 দিহান | TNB